মেয়েরা হাইপারথারয়েডে ভোগলে গর্ভধারণের আগে ও গর্ভাবস্থায় কি কি অসুবিধা হয় এবং করনীয় নিয়া কিছু তথ্য :

মেয়েরা  হাইপারথারয়েডে   ভোগলে গর্ভধারণের  আগে  ও  গর্ভাবস্থায়  কি  কি  অসুবিধা  হয় এবং  করনীয়  নিয়া  কিছু  তথ্য :

আগে  জেনে  নিই   হাইপারথায়রয়েড /          হাইপারথাইরয়ডিজম  কি ?

আমাদের  গলার  সামনে  অবস্থিত থাইরয়ড গ্রন্থির  হরমোনের  (রক্তে )  বাড়তি  মাত্রাই  (স্বাভাবিকের  চেয়ে  বেশি )  হচ্ছে -হাইপারথায়রয়েড/ হাইপা রথাইরয়ডিজ( Hyperthyroidism) .

উপসর্গগুলো  কি কি :

  অতিরিক্ত  গরম  বোধ / শরীর ঘেমে  যাওয়া  ।

উদ্বিগ্নতা

স্নায়ুদুর্বোলাবস্থা

উদ্ধত  আচরন / খিটমিটে  মেজাজ

রাক্ষুসে  ক্ষুধা ।

শরীরের  ওজন  কমে  যাওয়া ।

হাত – পা  কাঁপা (tremor)

অনিদ্রা

ডায়রিয়া

চুল   ও নখ  ভেংগে  যাওয়া ।

ত্বক  পাতলা  হওয়া  ।

হাত -পা  এর তালু   সিক্ত  বা  ভিজা  ভিজা

মাসিকের   পরিমান  কমে  যাওয়া ।

দীর্ঘদিন  পর  পর  মাসিক  হওয়া

গর্ভধারণে  ব্যর্থ  হওয়া

চক্ষুকটোর  থেকে  চোখ  বের  হওয়া (Exopthalmos)

হাইপোথাইরয়ডিজম  নির্নয় :

* রক্তে – TSH. .FT4 .এবং  FT3 এর  মাত্রা  দেখা ।

* USG of Thyroid  gland

* Radioactive Iodine uptake

* TSI(Thyroid Stimulating  Immunoglobulin )/antibody -এটা  রক্ত  পরীক্ষায়  ধরা  পড়ে

  করনীয় :

 হরমোন  বিশেষজ্ঞ / স্ত্রী বিশেষজ্ঞ/ নিঊক্লিয়ার

বিশেষজ্ঞকে  দেখানো  জরুরী ।

গর্ভধারণের  আগে    রক্তে  হরমোনের  মাত্রা

স্বাভাবিক এ  নামিয়ে  আনতে  হবে ।

গর্ভাবস্থায়  কখন  কখন থায়রয়েড হরমোনের  মাত্রা  চেক  করা  ভালো ?

গর্ভকালীন  প্রথম  ভিজিটে (গর্ভের  ৬ সপ্তাহের  মধ্যে  হলে  ভালো ); মাত্রা  ঠিক  হলেও  ১ মাস  পর পর এবং  ডাক্তার  এর  উপদেশ  মোতাবেক  ৬ সপ্তাহ  পর  পর  ও টেস্ট  করতে  হতে  পারে ।

  এ  হরমোনের  মাত্রা  গর্ভাবস্থায়   কেন  ঠিক  রাখতে  হয় ?

গর্ভজাত  সন্তানের   বিকলাঙ্গতা  রোধ / কম  ওজোনের (IUGR)   বেবি হওয়া  বন্ধ  করতেএবং   মাকে  ভয়াবহ  জটিলতা  থেকে  মুক্তি  দিতে ।

মায়ের  অসুবিধা :

* প্রিএকলাম্পটিকটক্সেমিয়া /preeclamptic toxaemia (PET) .

* সময়  পূর্ন  হওয়ার  আগে  প্রসব /  প্রিটার্ম লেবার ।

* হার্ট  অকেজো  বা  বন্ধ  হওয়া ।

* থাইরোয়েড  স্টর্ম (storm)। এটি  জীবনের   মরণাপন্ন  অবস্থা;তাৎক্ষনিক  সঠিক  চিকিৎসা  না  নিলে  মায়ের  মৃত্যুর  আশংকা  থাকে ।

চিকিৎসা :

*  ঔষধ খেতে  হবে

প্রথম  ৩ মাস  propyl  thiouracil

তারপর  মেথি ম্যাজল  ।

মেথি ম্যাজল এ বাচ্চার  বিকলাঙ্গতা  বেশি  হওয়ার  আশংকা  থাকে  ।

* অপারেশন  করে  থাইরোয়েড nodule  ফেলে দিতে  হবে অথবা  থাইরোয়েড gland  এর  কিছু অংশো অপসারন  করা  লাগাতে  পারে ।

* রেডিও  আইসোটোপ  দিয়া  গর্ভাবস্থায়  চিকিৎসা  করা  যাবে  না ; বাচ্চার  

থাইরোয়েড  গ্রন্থি  তৈরি হতে  বাঁধা  দেয়  এ  চিকিৎসা ।

রেডিও আইসোটোপ দিয়া  চিকিৎসা  করার  ১ বছর  পর  গর্ভধারণ  করা যাবে ।

 শরীরে (রক্তে )থাইরোক্সিন হরমোনের  বাড়তি  অনুযায়ী  ডাক্তার  ঔষধের মাত্রা  ঠিক  করে  দিবেন ।এবং  কোন  ধরনের  চিকিৎসা  সঠিক  তা  শুরু  করবেন ।ফলো -আপ  জরুরী ।

এ  সব  রোগীদের বাচ্চা  নেওয়ার  নিরাপদ  সময়  হচ্ছে  চিকিৎসার  সম্পূর্ন  করে এবং  বিশেষজ্ঞ  ডাক্তারের  পরামর্শ  নিয়া ।

কতদিন  ঔষধ  দিয়া  চিকিৎসা  করা  লগে ?

১ থেকে  ২ বছর ।

ডাঃ নুরজাহান বেগম

সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Scroll to Top