বন্ধ্যাত্বের আধুনিক চিকিৎসা – বহু আলোচিত টেস্ট টিউব বেবি :
টেস্ট টিউব বেবি সম্বন্ধে আমাদের অনেকের ধারনা হচ্ছে টিউবে বাচ্চা বড় হয় । Test Tube Baby কে IVF ও বলা হয় ।
IVF বা ইন ভিট্রো ফারটিলাইজেশন একটি পদ্ধতি – নারীর ডিম্বানু এবং পুরুষের শুক্রানুকে শরীরের বাইরে ( ল্যাবরেটোরিতে ) কৃতিম উপায়ে ফার্টিলাইজ করে প্রাপ্ত ভ্রুনকে নারীর জরায়ুতে স্থাপণ করা হয় । এ পদ্ধতিকে আমরা সচরাচর টেস্ট টিউব বেবী বলে থাকি । IVF করলেই ১০০% বাচ্চা হবে এমন ধারনা নিয়া অনেক বন্ধ্যা দম্পতি বিদেশে প্রতিনিয়ত পাড়ি দিচ্ছেন । কোন কোন দম্পতি দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভিড় -জমাচ্ছেন হন্তদন্ত হয়ে ;আবার বেশির ভাগ দম্পতি ভাবছেন অর্থ থাকলে টেস্ট টিউব
বেবি নিয়া নিজেরা সুখি হতেন এবং অনেকেরই IVF শব্দটা জানা নাই ।
এবার আমরা IVF সম্বন্ধে কিছু জানার চেস্টা করি —
সব বন্ধ্যা দম্পতির IVF লাগেনা ;
*যে বন্ধ্যা দম্পতির মহিলা সঙ্গীর দুটি টিউব বন্ধ
* নিন্মমানের ডিম্বানু / ডিম্বানুর সংখা অত্যন্ত কম
* একটি টিউব খোলা কিন্তু পূর্বে IUI সফল হয় নাই ।
বয়স ৩৫ বছরের বেশি এবং স্বামী প্রবাসেই বেশি থাকেন ।
* নারী অত্যধিক Endometriosis এ ভুগেন
পক্ষান্তরে .
দম্পতির বন্ধ্যত্বের কারন খুঁজে পাওয়া যায়না অথচ গর্ভধারণে অপারগ –
*পুরুষ সঙ্গীর শুক্রানুর সংখ্যা খুব কম বা উন্নত মানের (গঠন ও চলনে ) নয় ।
* বীর্য টেস্ট এ শুক্রানু অনুপস্থিত কিন্তু টেস্টিস এ উৎপন্ন হয় – এক্ষেত্রে ICSI বেশি ফলপ্রসূ ।
ICSI পদ্ধতিতে পুরুষের টেস্টিস থেকে শুক্রাণু বের করে নারীর ডিম্বানুর ভিতরে প্রবেশ করায়ে দিয়া ফারটিলাইজ় করা হয় ।
বাকি ধাপগুলো IVF এর মতো ।
* পুরুষের বীর্যপাত স্বাভাবিকপথে -মূত্রনালি দিয়া না হয়ে মূত্রথলিতে (Retrograde) হয় ত্রুটির কারনে -এমন অবস্থায় মূত্র থেকে প্রসেস করে প্রাপ্ত বীর্য দিয়া প্রথমে IUI করে গর্ভ না আসলে দম্পতির চাহিদা ও আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় IVF ও করা হয়
*পুরুষ সংগী সহবাসে অক্ষম এবং বাচ্চা চাইলে । শুক্রানু উন্নতমানের হলে IUi ও করা যায় ।
IVF এর প্রস্তুতি হিসাবে বেশি করে উন্নত মানের ডিম্বানু উৎপাদনের জন্য মহিলা সঙ্গিনীকে বেশ কিছু দামী ইনজেকশন দেওয়া হয় ।
USG(TVS) করে ফলিকুল ( যার ভিতর ডিম্বানু থাকে ) এর নং এবং সাইজ দেখা হয় ।
মহিলাকে অজ্ঞান করে যোনিপথ দিয়া USG এর সহায়তায় ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্বানু বের করা হয় এবং ইমব্রাওলজিস্ট কে দেওয়া হয়
স্বামীর প্রসেস করা বীর্য থেকে উন্নতমানের শুক্রানু দিয়া কৃতিম উপায়ে পেট্রিডিশে ডিম্বানু ফার্টিলাইজ করে ভ্রুন তৈরি করা হয় ।
এইভাবে প্রাপ্ত ভ্রুন বৃদ্ধি করে নারীর জরায়ুতে স্থাপণ করা হয় ।
প্রেগনেন্সি টিকিয়া রাখার জন্য মহিলাকে হরমোন দেওয়া হয়
ভ্রুন স্থাপনের ১৪ দিন পর প্রেগনেন্সি টেস্ট করা হয় ।
সততা .পরিছন্নতা ও ল্যাবের উপর IVF এর সাফল্য নির্ভর করে ৪০থেকে ৮০ % ।
নিম্নে দেখুন বিস্ব এর প্রথম টেস্টটিউব বেবি লাউসি জয় ব্রাউন ও তাঁর বাবা মায়ের ছবি