চিকিৎসা ফলপ্রসু করার জন্য .রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের করনীয় :
* রোগীর পুরো ইতিহাস নেওয়ার পর রোগীর ক্লিনিক্যাল ও রোগ অনুযায়ী সম্ভাব্য ল্যাবরেটরি (test) পরীক্ষা ( উন্নত মানের ল্যাব থেকে ) করে রোগ নির্নয় করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করবেন ডাক্তার :। ডাক্তারকেও সাহায্য করতে হবে রোগী ও তাঁর আপনজনদেরও । কাজেই .তাঁদের বেশ কিছু করনীয় রয়েছে –
* রোগীকে ডাক্তারের কাছে সঠিক তথ্য ও পুরো ইতিহাস বলতে হবে ; কোন – কিছু গোপন বা পরিবর্তন করা যাবেনা ।
ভালো ল্যাব থেকে সঠিক সময়ে টেস্ট করে দ্রুত ডাক্তারকে দেখানো জরুরি রোগ নির্নয়ের জন্য । কিন্তু বাস্তবে কি ঘটে –
অনেকেই ইচ্ছাকৃত টেস্ট করেন না /গুরুত্বহীন মনে করেন / ভাবেন ডাক্তার কমিশন নেওয়ার জন্য টেস্ট করাচ্ছেন /টাকার অভাব বলেন / কোন রোগীর অভিভাবক টেস্ট করতে অনুমতি দেন না ; বুঝতে পারেন নাই , মনে করেছেন ঔষধ খাওয়ার পর করলেই চলবে – আরো কতো কাহিনী ।
পক্ষান্তরে , কিছু রোগী প্রেসক্রিপশন থেকে ঔষধ খাওয়া শুরু করেন না রিপোর্ট দেখার আগে ; ফলতঃ রোগ বাড়তে থাকে কিছু রোগ ডাক্তার বুঝে ঔষধ দেন অথচ রোগী নিজের সিদ্ধান্তে তা বন্ধ করে
অনেকেই পরিচিত ল্যাব বা দালালের খপ্পরে পড়ে নিম্ন মানের ল্যাব থেকে রিপোর্ট ১/ ২ মাস পরে ডাক্তারকে দেখান । এই ২/ ৩ মাসে রোগীর রোগ থেমে থাকেনা – বিস্তার লাভ করে
* জরুরীক্ষেত্রে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা শুরুর সাথে সাথে অন্যান্য আনুসঙ্গিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সুজোগ – সুবিধা সম্বন্ধে ণিস্চিত হতে হবে । যেমন অপরিপক্কো শিশুর জন্মের আগেই শিশুর ডাক্তারের উপস্থিতি ও NICU রেডি রাখতে হবে ।
* রোগীর রোগ অনুযায়ী প্রয়োজনে অন্য ডাক্তার বা হাসপাতালে রেফার্ড করা মাত্র দেরি না করে রেফার্ডকৃত স্থানে যেতে হবে ।
* ডাক্তার বা কাউন্সিলারদের কাউন্সেলিং মন দিয়া শুনে , বিস্বাস করে বুঝে মেনে চলতে হবে ।
* ঔষধ খাওয়ার নিয়ম প্রেসক্রিপশনের লিখা অনুযায়ী যতদুর সম্ভব বুঝে খেতে হবে এবং কোর্স সম্পন্ন করতে হবে ।
* ঔষধ ভালো জায়গা / ফার্মেসি থেকে ক্রয় করতে হবে এবং মেয়াদ উত্তীর্ন এর তারিখ দেখে নিতে হবে ।
* ঔষধ সংরক্ষনের নিয়মও মেনে চলতে হবে ।
* ঔষধ খাওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য খাবার খাওয়ার তালকাও ফলো করতে হবে
* চলাফেরার নিয়মও মানতে হবে ।
* পরবতী সাক্ষাতের উল্লেখিত তারিখে স্বাস্থ্যফাইল নিয়া যেতে হবে ।
* গোসল. .পরিস্কার- পরিছন্নতা. বিশ্রাম ঘুম .ও পোশাক সম্বন্ধে সজাগ থাকতে হবে ।
* অস্ত্রপচার লাগলে পদ্ধতি ও প্রস্তুতি সম্বন্ধে জ্ঞান থাকতে হবে । প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছ থেকে পুরো বুঝে নিতে হবে । এ ব্যাপারে আমি শেয়ার না করে পারিনা – আসল
গার্জেণ না এসে দালাল আসেন , বারে বারে বিভিন্ন ব্যক্তি দফায় দফায় অমূলক প্রশ্ন করেন , অপারেশনের অংগীকারনামায় সহি দেন না- অজুহাত খাড়া করে /যাঁর সহি গ্রহনযোগ্য নয় তিনি দিতে চান / মিথ্যা পরিচয় ও ঠিকানা দেন । ডাক্তারকে গ্যারান্টির দিতে বলেন কোনই অসুবিধা না হওয়ার । সব অপারেশনেরই কিছু না কিছু ঝুঁকি থাকে ; একমাত্র আল্লাহই পারেন মানুসকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে । তবে ডাক্তার অবশ্যই প্রানপনে রোগীকে সুস্থ্য রাখার চেস্টা করেন ।
* অপারেশনের পর দল বেঁধে রোগীর বিছানায় বা ঘরে থাকা যাবেনা ।
* অপারেশনের পর মমতা নিয়া দক্ষ হাতে যত্ন নিতে হবে ; কোনও অসুবিধা বুঝা মাত্রই ডাক্তার / সিস্টার / হাসপাতাল কতৃপক্ষকে জানাতে হবে ।
* হিস্টোপ্যাথলজি করার উপদেশ মেনে
চলতে হবে ।
* কোন কোন রোগে বা অপারেশনের পর ফলো – আপ বা ভিন্ন চিকিৎসার দরকার হলে করতে হবে ।
বি : দ্র : আমাদের দেশে অনেকেই ডাক্তার সেজে চিকিৎসা দেন ; যেমন – হাতুড়ে চিকিৎসক .ডাক্তারের চেম্বারের সহকারী (সাধারন ব্যক্তি )ঔষধ বিক্রেতা .স্বাস্থ্যকর্মী /নার্স (ডিগ্রি ছাড়া ) এমনকি অন্য রোগী তাঁরা ঔষধ দেন । এগুলি আমাদের যাচায় করতে হবে । কারন ভুল চিকিৎসা আমাদের ক্ষতি করে ।
আমি ডাক্তার বলেই আত্বপক্ষ সমর্থনের জন্য লিখলাম মনে না করে বিবেকে – বিবেচনা করে সঠিক নিয়ম মেনে চললেই আমরা রোগমুক্ত হবো চিকিৎসায় ও আল্লাহর মেহেরবানীতে । আমিন ।