জরায়ুর ইনফেকশনের কারন .উপসর্গ .চিকিৎসা ও ইনফেকশন এড়ান সম্পর্কে কিছু তথ্য:
জরায়ুর ইনফেকশনকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে . পেলভিক ইনফ্ল্যামেটোরি ডিজিজ (PID) বলে ।
কোন কোন মহিলা অংগ / জিনিসও ক্ষতিগ্রস্ত হয় –
জরায়ুর মুখ বাদে পুরো জরায়ু
ডিম্বোনালি .গর্ভাশয় .বসতিকোটরের পাতলা পর্দা ( পেল্ভীক পেরিটোনিয়াম ). রক্তবাহী নালি (pelvic vein ).
কারন : কতিপয় জীবানু বিশেষ করে যৌনবাহিত জীবানু যেমন ক্লেমাইডিয়া ও গনরিয়া এবং মূত্রতন্ত্রের ইনফেকশন করে সেসব জীবানু ।
মূত্রতন্ত্রের ইনফেকশনকারী জীবাণুগুলো প্রজনন তন্ত্রে প্রবেশ করে . PID করে ।
বয়স – ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সে । ২০ বছরের আগে অপরিচ্ছন্ন যৌনকর্মে লিপ্ত হলে জরায়ুর ইনফেকশন হতে পারে ।
কিভাবে জরায়ুতে জীবানু প্রবেশ করে জরায়ুর ইনফেকশন করে ?
একাধিক যৌনসংগী থাকলে .
সহবাসের পর যৌনাঙ্গ পরিস্কার না করলে ।
পুরুষ সংগীর ক্লেমাইডিয়া .গোনোরিয়া থাকা অবস্থায় কনডম ব্যবহার না করে মিলন ঘটলে ।
যত্রতত্র MR.D&C ও স্বেচ্ছায় গর্ভপাত করালে এবং TVS . HSG Pap’s.পরীক্ষা করার সময় জরায়ুতে CU- T দেওয়ার সময় জীবানুমুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত না হলে.মাসিকের সময় ময়লা কাপড় পরিধান এবং যৌনাঙ্গে ব্যবহার করলে PID হতে পারে ।
উপসর্গ –
* তলপেটে ব্যথা
* জ্বর
* দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব
* পুঁজ মিশ্রিত স্রাব
* অনিয়মিত মাসিক
* মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরন
* মাসিক শুরুর আগে থেকেই তলপেটে ব্যথা
* সহবাসে ব্যথা
* কামরে
* বমি ভাব বা বমি
* বন্ধ্যত্ব ।
চিকিৎসা – একনাগারে ১৪ দিন এন্টিবাওটিক এবং প্রয়োজন মাফিক ব্যথানাশক
ঔষধ দিয়া চিকিৎসা করতে হয় ।
গুরতর জরায়ুর ইনফেকশন হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে শিরা দিয়া এন্টিবাওটিক দিয়া চিকিৎসা করতে হয় এবং ব্যথানাশক ঔষধও দিতে হয় ।
বস্তিকোটরে পুঁজ জমলে অপারেশন লাগে ।
সতর্কতা – যৌনসংগীর ও চিকিৎসা একই সাথে করা অতীব জরুরী ।
দেরি না করে চিকিৎসা (১/২দিনের মধ্যে ) শুরু করতে হবে ।
উপদেশ –
চিকিৎসার সময় বেশি করে পানি পান করতে হবে ।
চিকিৎসাকালীন সময়ে সহবাস বন্ধ রাখতে হবে ।
ব্যক্তিগতি পরিস্কার – পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে ।
জরায়ুর ইনফেকশনের ঝুঁকি কিভাবে এড়ানো যাবে ?
একটি মাত্র সহবাস সংগী রাখতে হবে
সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করতে হবে ।
মিলনের পর যৌনাঙ্গ পরিস্কার করতে হবে ।
মাসিকের সময় পরিস্কার স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে হবে ।
Cu- T.পরিধান .MR D&C গর্ভপাত . Hysteroscopy.TVS .HSG এক্সপার্ট ডা: দিয়া জীবানুমুক্ত পরিবেশে জীবানুমুক্ত যন্ত্রপাতি দিয়া করাতে হবে ।
PID নির্নয় :
* রক্তের CBC
* USG of lower abdomen
* মাসিকের রাস্তার উপরের দিক থেকে রস (high vaginal swab )
মূত্রনালির মুখ এবং বার্থোলীন gland এর মুখ থেকে রস নিয়া জীবানু নির্নয় ও কালচার করতে হবে ।
* Laparoscopy .
চিকিৎসা পরবর্তী করনীয় :
# চিকিৎসা শেষ করার ১ সপ্তাহ পর তলপেটের USG ও যোনির রস পরীক্ষা করাতে হবে ।
#পরবর্তী পর পর ৩ মাসিকের পর একই পরীক্ষা আরো ৩ বার করায়ে বুঝতে হবে ইনফেকশন নির্মূল হয়েছে কি না ?
জরায়ুর ইনফেকশন না হওয়ার জন্যই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং সাবধানতা অবলম্বন করায় শ্রেয় – বন্ধ্যত্ব ও অপারেশনের ঝুঁকি এবং শারীরিক কস্ট থেকে রেহায় পাওয়া যাবে । এ ব্যাপারে যতটুকু সম্ভব জনগনকে সচেতন করার অনুরোধ রইলো । আমিন ।
.