মহিলা প্রজনন তন্ত্রের যক্ষার প্রভাবজনিত সমস্যাসমূহ ও প্রতিকার
আমাদের অনেকেই মনে করি . শুধু ফূসফূসেই যক্ষা হয় । আসলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এ রোগ হতে পারে ।
যেমন ———- ব্রেন .হাড় .গ্রন্থি .পরিপাকতন্ত্র .ত্বক .প্রজননতন্ত্র যক্ষারোগে আক্রান্ত হয় ।
আজ আমরা জানবো মহিলা প্রজননতন্ত্রের যক্ষা নিয়া —
ফ্যালোপিয়ান টিউব যক্ষা দ্বারা সবচেয়ে বেশি
আক্রান্ত হয় ।
টিউবে যক্ষা হলে কি অসুবিধা হয় –
বন্ধ্যাত্ব ।
তলপেটে ব্যথা
পিন্ড (mass )-অন্য অঙ্গের সাথে লেগে গিয়া এ দলা /পিন্ড তৈরি হয় ।
টিউবের কি কি পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় ?
অগনিত ক্ষুদ্র গুটিকা / আব টিউব জুড়ে থাকে ।
টিউব সীসার টিঊবের মতো শক্ত হয় ।
টিউবের শেষপ্রান্ত থোলিয়ার ( Tobacco Pouch) মতো দেখায় ।
টিউবের ফিমব্রিয়ার বিনাশ ঘটে এবং ওভারি ও আশে – পাশের অঙ্গের সাথে একেবারে এঁটে যায় । এ সমস্ত পরিবর্তনের জন্য টিউব ডিম্বানু ধরতে (pick – up) পারেনা ।
টিউব থেকে চ্যাটচেটে তরল নির্গত হয় এবং শেষে টিউব বন্ধ হয়ে পড়ে । কাজেই টিউবে ডিম্বানু ও শুক্রানুর আগমন এবং একত্রিতকরন বন্ধ হয় বলে ভ্রুন হতে পারেনা ;ফলতঃ নারী বন্ধ্যাত্বের শিকার হয় ।
যক্ষায় আক্রান্ত টিউব পূর্ন চিকিৎসা ও খোলার পরও কাজ করতে পারেনা ;অনেক সময় খোলাও যায় না যদি বেশি জটলা পাকায় ।
শুধু ডিম্বাশয় এ যক্ষা হতে পারে ; ডিম্বাশয়য়ে যক্ষা হলে ashe-পাশের প্রজনন অঙ্গের সাথে জটলা পাকায়ে পিন্ড / mass / গোটা তৈরি করে ।
উপসর্গ :
রুগী গোটা এবং ব্যথা অনুভব করেন ।
প্রথম দিকে মাসিকের পরিমান বেশি হয় এবং ধীরে ধীরে অনিয়মিত হয় ও একেবারে / পুরো বন্ধ হয় এবং ডিম্বানু বড় ও মুক্ত হয় না ; ফলতঃ সন্তান ধারনে অক্ষমতা আসে ।
জরায়ুতে যক্ষা হলে ভিতরের আবরনে ও ইহার নিচে বেশ কিছূ পরিবর্তন (আব /গুটি) হয় বলে বেশি রক্তক্ষরন. .ফোটা ফোটা রক্তক্ষরন .এবং একেবারে পিরিয়ড বন্ধ হয় অল্প বয়সে ।
জরায়ু থেকে তরল বের হয় ।
জরায়ুর দুই দেওয়াল একসাথে লেগে যায় ।(synechia)
বস্তিকোটরে নকল (pseudo Cyst ) তৈরি হয় যা usg এ ধরা পড়ে ।
চিকিৎসা : এন্টি টিউবারকুলার ড্রাগ বহুদিন (9 মাস থেকে দেড় /দুই বছর একটানা খেতো হয় ।
প্রজননতন্ত্রের যক্ষা সেরে গেলে নারী গর্ভধারণ ও প্রসব করেন ; কাজেই টেনশন না করে রোগ নির্নয় চিকিৎসা নেওয়া জরুরি । চিকিৎসা না নিলে বোস্তিকোটরের দীর্ঘকালীন (Chronic pelvic pain ) এ ভুগতে হয় ।
ডাঃ নুরজাহান বেগম
সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়