বন্ধ্যত্ব ; গাইনী রোগ নির্ণয়ে এবং চিকিৎসায় ডায়াগনস্টিক এবং অপারেটিভ ল্যাপারোস্কোপী :
ল্যাপারোস্কোপী একটি অত্যাধুনিক পদ্ধতি যেখানে পেট না কেটে শুধু পেটে সরু যন্ত্র দিয়া ৩/ ৪ টি ছিদ্র (ফুটো ) করে পেটের ভিতরের বিভিন্ন অংগ টেলিস্কোপ / দূরবীন ( ছোটো জিনিসকে বড় করে দেখার যন্ত্র ) এবং ক্যামেরার সাহায্যে দেখা যায় । অঙ্গগুলোর প্রতিচ্ছবি মনিটরের (টিভি ) পর্দায় পড়ে । অঙ্গগুলোর স্বাভাবিক / অস্বাভাবিক গঠন .অবস্থান সহজেই পরিলক্ষিত হয় । রোগীকে অজ্ঞান করা লাগে । তারপর
.নাভির নিচ নাভি দিয়া একটা ছিদ্র এবং অন্য ফুটোগুলো পেটের দুই পাশ দিয়া করা হয় । নাভির ফুটোটা ১০ মিলিমিটার এবং অন্যগুলো ৫ মিলিমিটার ।
মহিলার বন্ধ্যত্ব নির্নয় ও নিরাময়ে ল্যাপারোস্কোপীর ভুমিকা :
* মহিলাদের প্রজনন অঙ্গের অবস্থা বিশেষ করে টিউব খোলা না বন্ধ তা ল্যাপারোস্কোপীর সাহায্যে ডাই – টেস্ট করে বুঝা যায় এবং বেশির ভাগ সময়েই সার্জন খুলে দিতে সমর্থ হন ।
* ওভারি / গর্ভাশয়ে চকলেট সিস্ট থাকলে তা দেখে অপসারন করা যায় ।
* পলিসিস্টিক ওভাররিতে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য মেয়ে বন্ধাত্ব হয় ;.ওভারিতে ফুটো করে দিলে উক্তি অসুবিধা নিয়ন্ত্রনে আসে এবং মেয়েরা গর্ভবতী হন ।
* এন্ডমেট্রিওসিস থাকলে গ্রেড নির্নয় করে শল্য চিকিৎসা দেওয়া খুবই সন্তোষজনক । এই রোগে জরায়ুর সাথে আশে – পাশের অংগ এমনকি নাড় জট পাকায়ে একসাথে লেগে যায় বলে টিউব ও ওভারি কাজ করতে না পারায় বন্ধ্যত্ব হয় । এক্ষেত্রে অঙ্গগুলোর অবস্থান এ্যাডহেসিওলাইসিস করে ঠিক করা হয় ।
এন্ডমেট্রিওটিক স্পটকেও পুড়ায়ে দিয়া রোগটিকে নিয়ন্ত্রনে আনা যায় ।
গাইনী রোগ নির্নয় এবং নিরাময়ে ল্যাপারোস্কোপী:
* দীর্ঘস্থায়ী (৬ মাসের বেশি ) পেটের ব্যথা নির্নয় ও নিরাময়ের চিকিৎসা ল্যাপারোস্কোপীর সাহায্যে সম্ভব । এক্ষেত্রেও এ্যাডহেসিওলাইসিস করা হয় । ব্যথা বহনকারী নার্ভ / স্নায়ুও কেটে দেওয়া যেতে পারে ।
* জরায়ু বা ওভারির টিউমার অপসারন নিখুঁতভাবে অন্য অঙ্গের ক্ষতি না করে করা যায় ।
* জরায়ুর ইনফেকশন (PID) নির্নয় ও শল্য চিকিৎসা খুবই সহজে করা যায় ; জরায়ু রাখাও সম্ভব হয় – এ্যাডহেসিওলাইসিস এবং কটারি করে । কটারি দিয়া ইনফেকশন সরানো সম্ভব ।
* এক্টোপিক প্রেগনেন্সির সার্জারি করা যায় ।
* জরায়ুও ফেলা যায় ।
ল্যাপারোস্কোপী সুবিধা –
হাসপাতালে ২ দিনের বেশি থাকা লাগে না এবং ২ সপ্তাহের পর কাজ করা যায় ।
রক্তপাত কম হয় ।
ইনফেকশনও কম হয় ।
বি :দ্র: কোনো অঙ্গের ক্যান্সার সন্দেহ হলে সন্দেহজনক স্থান থেকে ল্যাপারোস্কোপীর সাহায্যে টিসু সংগ্রহ করে হিস্টোপ্যাথোলোজি করে ক্যান্সার সনাক্ত করা যায় ।