বন্ধ্যত্বের আধুনিক চিকিৎসা
IUI ( Intrauterine Insemination) /আই ইউ আই বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার জন্য একটি অতি সহজ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি ।
প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য IUI করা হয় । এ পদ্ধতিতে স্বামীর প্রসেস (wash sperm) করা শুক্রানু স্ত্রীর জরায়ুতে নলের /ক্যাথেটার এর মাধ্যমে দেওয়া হয় ।
প্রস্তুতি :
IUI করার প্রস্তুতি হিসেবে মহিলার গর্ভাশয়ে ডিম্বানুর সংখ্যা এবং সাইজ বৃদ্ধির জন্য কিছু মেডিসিন নিতে হয় ;এবং দম্পতিকে পদ্ধতির আগের ২-৩ দিন সহবাস থেকে বিরত থাকতে হয় । মহিলার TVS করে ডিম্বানুর সংখ্যা ও সাইজ দেখা হয় । ডিম্বানুর পরিমাপ দেখে চিকিৎসক IUI এর দিন নির্ধারন করেন ।
IUI করার দিন পুরুষ ও স্ত্রী উভয়কে হাসপাতালে মাত্র ২ ঘন্টা বা সামান্য কিছু বেশি সময় থাকতে হয় ।
মহিলাকে অজ্ঞান করা লাগেনা ;তেমন ব্যথাও পান না । স্বাভাবিক কাজকর্ম ও অফিস চালাইয়া যেতে পারবেন সেদিন থেকেই । তবে গভীর পানিতে যৌনাঙ্গ ডুবায়ে গোছল করা নিষেধ ।
সাধারনতঃ ৩ থেকে ৬ বার IUI করা যায় একই মহিলার । তবে বয়স ৩৫ এর বেশী হলে ৩ বারের বেশী না করে সময় বাঁচানোর জন্য IVF এ চলে যাওয়া ভালো ।
কোন ক্ষেত্রে IUI করা দরকার :
*বন্ধ্যাত্বের কারন খুঁজে না পেলে ।
*পুরুষের শুক্রানুর সংখ্যা অনেক কম বা ত্রুটিযুক্ত আকৃতি এবং কম গতিসম্পন্ন হলে
*পুরুষের স্বাভাবিক পথে বীর্যপাত না হয়ে মূত্রথলিতে হলে ।
*মহিলার জরায়ুর মুখের মিউকাসে (রসে )
এন্টি স্পার্ম এন্টিবডি (যা শুক্রানুকে জরায়ুতে প্রবেশে বাঁধা দেয় ।) থাকলে ।
*স্বামী প্রবাস থেকে অল্প সময়ের জন্য দেশে আসলে ।
*মহিলার যোনিপথ এর দেওয়াল ঘন ঘন সংকুচিত হলে (Vaginismus )
সফলতা :প্রতি IUI এ প্রাই ২০% । সাফল্য নির্ভর করে –
পুরুষের সিমেন / স্পার্ম ওয়াশ (পরিস্কার )এর উপর
চিকিৎসকের উপর
বন্ধ্যাত্বের কারনের উপর
মহিলার বয়সের উপর ।
বিবেচ্য বিষয় –
মহিলার কমপক্ষে ১ টি টিউব খোলা থাকতে হবে ।
সিমেন /স্পার্ম ওয়াশ এর পর গতিশীল স্পার্ম কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন হতে হবে ।
বীর্য গ্রহনের ২ ঘন্টার মধ্য IUI সম্পন্ন করতে হবে :দেড় ঘন্টায় হলে বেশি ভালো ।
IUI করার পর মানসিক শান্তির জন্য মহিলা ৭-৩০ মিনিট পর্যন্ত চিৎ হয়ে শুয়ে থাকতে পারেন ।
IUI করার পর কি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় এবং বিশ্রাম নিতে হয় ?
না ।
IUI করার পর কি সহবাস নিষেধ ?
না ।
ডাঃ নুরজাহান বেগম
সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়