গর্ভের প্রথম ৩ মাসে কিছু উপসর্গ . কারন ও করনীয় :
প্রথমে আমরা জেনে নি উপসর্গ গুলো কি কি —-
* বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
* খাবার খেতে না পারা
*খাবারে অরুচি আসা
*মাথা ঘোরা
*তলপেটে ব্যথা
* স্তনে ব্যথা
*ঘন ঘন প্রস্রাব
* খিটমিটে মেজাজ /উত্তেজনা
* বুক জ্বালাপোড়া
* কোস্টোকাঠিন্য
ক্লান্তি
কারন :
উপরোক্ত উপসর্গ গুলো গর্ভধারনের ফলে
হরর্মোনের তারতম্য এর দরুন ঘটে ।
সমস্যাগুলো কি গর্ভের জন্য স্বাভাবিক ?
হা ।
সমস্যাসমূহ কি সন্তানের জন্য ভালো ?
হা .গবেষনায় দেখা গেছে উপসর্গ গুলো মায়ের জন্য কস্টকর হলেও হরমোনের প্রভাবে গর্ভপাত কম হয় ও গর্ভস্থ বাচ্চা সুন্দরভাবে জরায়ুতে বেড়ে উঠে ।
উপসর্গগুলা কি সব হবু মা ভোগ করেন ?
কোন কোন গর্ভবতী একটিও সমস্যার সম্মুখীন হন না । প্রাই ৭০ % গর্ভবতী এ সমস্যায় ভুগেন ।
করনীয় :
বমি ভাব বা বমি হলে –
গর্ভবতীকে আশ্বাস দেওয়া -বাচ্চার জন্য ভালো এবং ১২বা ১৪ সপ্তাহ হলেই ধীরে ধীরে চলে যাবে ।
ডাক্তারের দেওয়া বমিনশোক ঔষধ সেবন করা ।
সকালে বিছানা থেকে উঠার আগে হাত – পা নাড়াচাড়া করা এবং শুকনো খাবার (টোস্ট .চিড়া -মুড়ি .আলুর চিপস .খেঁজুর ) খাওয়া ।
মুক্ত বাতাসে কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করা ।
অনায়াসে বাতাস চলাচল করে এমন পরিবেশে থাকা ।
সকালে বমি ভাব বা বমি বেশি হয় বলে এটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়
মর্নিং সিকনেস ।
ছোট ছোট চুমুকে ১ ঘন্টা পর পর পানি পান করা .খেয়াল রাখতে হবে দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করার ;পানিশূন্যতা হবে না এবং শরীর আদ্র থাকে ও মেজাজ ভালো থাকে .গ্যাস বাড়বেনা .কোস্টকাঠিন্য হবেনা ।
খাবারে অরুচি -যে খাবার খেতে পারবেন তা অল্প অল্প করে বারে বারে খাবেন ।
সুগন্ধি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে ।
মাথা ঘোরা -শুয়ে পড়তে হবে ও পুস্টিকর খাবার খেতে হবে ।
তলপেটে ব্যথা – জরায়ু বড় হলে বাচ্চার বৃদ্ধি ঘটবে বলে আসোস্তো করতে হবে ;ডাক্তারের দেওয়া ব্যথানাশক ঔষধ সেবন ।
স্তনে ব্যথা : বাচ্চার দুধ তৈরি ও সংরক্ষণ এর জন্য স্তনে পরিবর্তন হয় ও আকারে বড় হওয়ার জন্য ব্যথা -সহ্য করার উপদেশ দিতে হবে ।
বুক জ্বালাপোড়া ও কোস্টকাঠিন্য -গর্ভাবস্থায় হজম শক্তি কমে যায় ; পেট খালি হতে সময় বেশি লাগে ; ভাঁজা .মশলা ও চর্বি
খাবার পরিহার করতে হবে ।
উত্তেজনা – গর্ভ সম্পর্কে পুরো ধারনা দিয়া ভয় কমাতে হবে .খাপ খাওয়ানোর পরামর্শ দিতে হবে ।
ক্লান্তি – বমি হওয়ার ও খেতে না পারার জন্য পুস্টির অভাবে . খেতে হবে এবং দিন -রাতে মোট ১০ ঘন্টা (দুপুরে ২ ঘন্টা ও রাতে ৮ ঘন্টা ) ঘুমাতে হবে ; কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হবে ।
প্রসবপূর্বো যত্ন সময়মতো সঠিক ভাবে নিলে উপসর্গ গুলো গর্ভের জন্য যে স্বাভাবিক তা বুঝা সহজ হবে ;আসুন এ ব্যাপারে আমরা সচেতন হই ।
ডাঃ নুরজাহান বেগম
সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়