গর্ভাবস্থায় (Chiken pox) জলবসন্ত
জলবসন্ত কি ?
এটি ভাইরাস সংক্রমিত অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ ।
কখনওএ রোগ হয় ?
বছরের যেকোন সময় হতে পারে তবে বসন্তকালে মহামারী আকারে হতে দেখা যায় ।
নবজাতক থেকে শুরু করে যেকোন বয়সে এরোগে হতে পারে ;তবে বেশি বৃদ্ধ বয়সে এ রোগের প্রকোপ কম ।
গর্ভধারিনীর জলবসন্ত হলে গর্ভস্থ বাচ্চার এবং মায়ের ক্ষতি হয় ।
কিভাবে এ রোগ ছড়ায় :
[ ]*সংক্রামিটত রোগীর হাঁচি – কাশি ও স্বাসের মধ্যে যে জীবাণু থাকে তা বাতাসে মিশে গিয়া মহামারী আকারে জনগনকে সংক্রমিত করে ।
*রোগীর সংস্পর্শে আসলে
*রোগীর কাপড় – চোপড় ও ব্যবহৃত জিনিস
স্পর্শ করলে ।
* জলবসন্ত এর ফোসকার পানি শরীরে লাগলে ।
ফোসকার চলটাও সংক্রমন ছাড়ায়
লক্ষন গুলো কি কি :
জ্বর
হাঁচি – কাশি
গা ম্যাজ ম্যাজ করা/ বা শরীরে ব্যথা
মাথা ব্যথা
নাক দিয়া পানি ঝরা
ক্ষুধামন্দা
ডায়রিয়া
দুর্বলতা
নিউমোনিয়া
মাথা .হার্ট ও কিডনি প্রদাহ
শরীরে ফুসকুড়ি (rash )বা গুটি ওঠা ।
শরীর চুলকানো ।
শরীরে জীবানু প্রবেশের সাথে সাথে কি লক্ষন দেখা যায় ?
না
তাহলে কখন লক্ষন দেখা দেয় ?
জীবানু প্রবেশের ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে ।
ফুসকুড়িগুলো কেমন দেখায় ?
লাল বড় ঘামাচির মতো
পানি / পুঁজভর্তি ফোস্কা
চলটা পড়া ।
সব ফুসকুড়ি কি একসাথে ওঠে ?
না পর্যায়ক্রমে উঠতে থাকে ।
ফুসকুড়ি কোথায় কোথায় দেখা যায় ?
২ কানের পিছনে
মুখে
মাথায়
পিঠে – পেটে
হাত -পায়ে
নাকে ও মুখের ভিতরে
পায়ের পাতা এবং হাতের তালুতে দেখা যায়না ।
কখন সংক্রামন বেশি ছড়ায় ?
ফুসকুড়ি ওঠার ৫ দিন আগে থেকে চলটা (কালো আবরন /crust ) পড়ার ৬ দিন পর্যন্ত ।
সংক্রমন না ছড়ানোর জন্য কি করা দরকার ?
রোগীকে আলাদা আলোহীন ঘরে রাখতে হবে ।
তাঁর সংস্পর্শ ত্যাগ করতে হবে ।
তাঁর জিনিসপত্র ব্যবহার করবেনা
তাঁকে দেখার জন্য আলাদা লোক নিয়োগ করতে হবে ।
গর্ভবতীর কি অসুবিধা হয় ?
দুর্বলতা
ক্ষুধামন্দা
নিউমোনিয়া
ডায়রিয়া
রক্তে ইনফেকশন ।
বাচ্চার কি ক্ষতি হয় ?
জন্মগত ত্রুটি
কম ওজনের বাচ্চা
নবজাতকের বসন্ত ।
জন্মগত ত্রুটির অকাট্য প্রমান নায় ।
চিকিৎসা :
ডাক্তার দেখায়ে চিকিৎসা নিতে হবে ; ডাক্তার উপসর্গ কমানোর এবং ইনফেকশন না হওয়ার মেডিসিন দিবেন । উপদেশ ও দিবেন ।
রোগীর যত্ন কিভাবে নিতে হবে :
পুস্টিকর খাবার ও পানি বেশি খেতে হবে
সুতি ঢিলা পোশাক পরিধান করতে হবে
দিনে ২বার পোশাক বদলাতে হবে ।
প্রতিদিন উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করতে হবে এবং নরম কাপড় দিয়া আলতো ভাবে শরীর মুছতে হবে
প্রতিরাতে বিছানার চাদর ও বালিশের কভার বদলাতে হবে ।
জীবনে কতবার জলবসন্ত হতে পারে ?
সাধারনতো একবার হলে প্রাকৃতিকভাবে এ রোগের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ গড়ে উঠে ;তবুও কদাচিৎ অল্প পরিসরে হতে পারে ।
কোন ভ্যাকসিন আছে ?
হা ।
কখন নিতে হয় ?
১২ থেকে ১৫ মাস বয়সে ১ বার
৪-৫ বছর বয়সে আরেকবার ।
গর্ভবতীর চিকিৎসা অবশ্যিই করাতে হবে ।
বাংলাদেশে এক ব্যাংককর্মকর্তার স্ত্রী সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পোয়ে মারা গেছেন ;তাঁকে সাধারন কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নাই ছোঁয়াচে রোগ বলে ।
কাজেই আলাদা হাসপাতাল থাকো জরুরী এরূপ রোগী ভর্তি করার জন্য ।
মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে শেসে ভর্তি নিলেও সঠিকভাবে সরঞ্জামের অভাবে যত্ন নেওয়া যায় নায়। হাসপাতাল থেকে জানানো হয় শুধু j জলাতঙ্ক রোগীর সব ব্যবস্থা আছে ।
সুতরাং . মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি এসব রুগীর চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতাল ও সেবার দ্বার উন্মুখ করেন তবে সংশ্লিষ্ট রুগী ও জনগন উপকৃত হবেন বলে আস্হা রাখি ।
ডাঃ নুরজাহান বেগম
সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়