গর্ভাবস্থায় করনীয় :
*প্রেগনেন্সি নিশ্চিতকরন ;
কারন অনেক সময় প্রেগনেন্সি টেস্ট ভুল হয় এবং প্রেগনেন্সির উপসর্গগুলো অন্য রোগের সাথে মিল আছে । তাছাড়া পিরিয়ড বন্ধ থাকলেই মুরুব্বীরা গর্ভবতী ঠাহর করেন এবং প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে বাধা দেন ।
* বিশুদ্ধপানীয় পান করা :
প্রথম থেকেই প্রচুর তরল ও পানি পান করতে হবে পানি শূন্যতা রোধ করতে ।
তরল খবরগুলো হচ্ছে –
মাছ -মাংস ও সবজির ঝোল
ডালের পানি
তাজা ফলের রস
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
ভাতের মাড়
ডাব
স্যালাইন
.লেবুর সরবত
বেলের সরবত
পুদিনাপাতার সরবত
জিরা ভিজানো পানি
রসালো ফল – শশা খিরা তরমুজ তালের সাস ।
বি :দ্র : অল্প করে ঘন ঘন পানি পান করতে হবে । বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে ।
শুকনো খাবার ( চিড়া মুড়ি চানাচুর .ভাজা ছোলা খেজুর ) সারাদিন চিবোতে হবে ; এতে বমি ভাব বা বমি হবেনা । গর্ভের প্রথম ৩ মাস শুকনো খাবার চিবানো বমি বা বমিভাব রুখতে পারে এবং রুচি বাড়ায় ।
* খাবারের ধরন :
গর্ভবতীর খাবার নিয়া বাক – বিতণ্ডার শেষ নেই । মুরুব্বিরা বেবি বড় হলে নরমাল ডেলিভারি হবেনা ভেবে গর্ভবতীকে কম খাওয়ার নির্দেশ দেন । পক্ষান্তরে .অনেকেই আগের চেয়ে দ্বিগুন খেতে বলেন । দুটোর কোনটায় ঠিক না ।
গর্ভের প্রথম ৩ মাসে গর্ভবতীরা বেশি খেতে পারেন না ; যা খেতে পারেন তার চেয়ে কিছু বেশি খাওয়ার উৎসাহ দিতে হবে ।
দ্বিতীয় ৩ মাসে ৩০০ ক্যালরি এবং শেষ ৩ মাসে ৫০০ ক্যালরি বৃদ্ধির মতো খেতে হবে ।
প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় সব উপকরনই থাকতে হবে ;যেমন –
আমিষ – মাছ – মাংস ডিম দুধ ডাল
শর্করা ভাত রুটি আলু
চর্বি ঘি মাখন চর্বিযুক্ত mang
ভিটামিন সব ফ্রেশ সবজি .রঙ্গিন ফল l- মূল
খনিজ – লবন – সামুদ্রিক মাছ .ডাব দুধ
এককথায় .খাবার সুষোম পুস্টিকর ও কেমিক্যালমুক্ত / বিশুদ্ধ হতে হবে ।
সুজোগ থাকলে ডাইটিশিয়ান দিয়া খাদ্য- তালিকা তৈরি করে নেওয়া বাঞ্ছনীয় ।
* পোশাক :
পরিস্কার – পরিছন্ন সুতি ঢিলে -ঢালা সহজেই পরিধানযোগ্য হতে হবে ।
* পাদুকা – সঠিক মাপের নরম ও সমতল হতে হবে ।
* বিশ্রাম / ঘুম – দুপুরে ২ ঘন্টা খুম / বিশ্রাম এবং রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমানো জূরুরী ।
* ভ্রমন :
গর্ভের প্রথম ৩ মাস এবং শেষের ১ মাস ভ্রমন না করায় শ্রেয় । জরুরি হলে ভ্রমন সংগী অত্যন্ত আপন ও যত্নশীল হতে হবে। একনাগারে ২ ঘন্টার বেশি জার্নি না করা ভালো । ঝাঁকুনি .চাপ উঁচু-নিচু রাস্তা পড়ি এড়িয়ে চলতে হবে । মোটর সাইকেল .রিকশা বাস জার্নি নিরাপদ নয় । পানি -পথের ও প্লেনের জার্নি কিছুটা আরামদায়ক হলেও প্লেনে জার্নির পুরো সময় সিট – বেল্ট পেটের নিচে আলতো করে বেঁধে রাখতে হবে ; হাত – পা নাড়া ও ছড়ানোর চেস্টা করতে হবে । পিঠের পিছনে পাতলা বালিশ / কুশন ব্যবহার করা ভালো । ঘন ঘন পানি ও হোমমেড খাবার খেতে হবে ।
জার্নি বিরতিতে একটু হাটাহাটি করতে হবে ।
প্রেসক্রিপশন .মেডিসিন এবং পরীক্ষার রিপোর্ট কাছে রাখতে হবে ।
* কাজকর্ম : ঘরের স্বাভাবিক – হালকা কাজ কর্ম করা যাবে । ধান মাড়া / ভাংগা .ভারী জিনিস তোলা ঘর মোছা কাপড় কাঁচা যাবেনা ।
* গোসল – প্রতিদিন সাভাবিক তাপমাত্রাসম্পন্ন পানি দিয়া গোসল করতে হবে । উষ্ণ পানি ৫ মিনিটের বেশি ব্যবহার করা ভালো না ।
* সহবাস – সাবধানে আসন পরিবর্তন করে পেটে চাপ না দিয়া মিলন সম্বব ; জোর – জবর – দোস্তি চলবেনা । গর্ভের শেষ মাসে সহবাস থেকে বিরত থাকলে পানি ভাংগা ও ইনফেকশননের ভয় থাকেনা ।
* সিঁড়ি বেয়ে চলা – গর্ভের মধ্যো শেষের ৩ ম
মাস সিঁড়ি বেয়ে চললে পড়ে যাবার ও পানি ভাংগার ভয় খুবই বেশি ; সুতরাং এড়িয়ে চলতে হবে ।
* অভ্যাস :
ক্যাফিন , কোকেন , মদ , নেশায় আশক্ত খাবার পরিহার করতে হবে । তামাক , গুল জর্দা ধূমপান নিষেধ । ধূমপায়ীদের থেকে দূরে থাকতে হবে ।
* সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যাবে । তবে মার্কারি থাকার ভয়ে বেশি খাওয়া ভালো না ।
* কাঁচা .আধা সিদ্ধ মাছ মাংস ডিম এবং অপাস্তুরিত দুধ খাওয়া যাবেনা ।
ওজন বৃদ্ধি :
যাঁদের স্বাভাবিক ওজন তাঁদের প্রেগনেন্সির শেষের দিকে মোট ওজন বাড়াতে হবে ১০ /১২kg ,
বেশি মোটা হলে বর্ধিত ওজন হতে হবে – ৫-৮ kg
ক্ষীনকায় মেয়েদের সর্বমোট ওজন হওয়া ভালো ১৫ kg
ব্যায়াম :
বেশি শক্ত ব্যায়াম করা যাবেনা .তবে সকালে ও বিকালে মুক্ত বাতাসে হাঁটতে হবে । ধীরে সাঁতার কাটাও যাবে । শুয়ে বা বসে হাত – পা নাড়তে হবে ।
টিকা :
আগে TT টিকা দেওয়া না থাকলে – ৫ মাস পূর্ন হলেই ১ মাস পর পর ২ টি টিকা নিতে হবে ।
অন্যদের সচেতন করুন প্লিজ ।