শিশুর জন্মগত ত্রুটি /বিকলাঙ্গতা -পর্ব ২
শিশুর জন্মগত ত্রুটি .জানুন সচেতন হোন .প্রতিরোধ করুন এবং নির্নয়
করে চিকিৎসা করুন :
জন্মগত ত্রুটি সম্পর্কে আমরা আজ আরও কিছু জানি ।
জেনেটিক কারনে কি কি ত্রুটি বা বিকলাঙ্গতা হয় –
* ডাউন সিনড্রোম
* থ্যালাসেমিয়া
* সিস্টিক ফাইব্রোসিস
* সিকেল সেল ডিজিজ
* হেমোফিলিয়া ।
হাম .টক্সপ্লাজমা .সাইটোমেগালোভাইরাস ইত্যাদি দ্বারা মায়ের সংক্রমনজনিত কারনে শিশুর বিকলাঙ্গতা গর্ভের সময়কাল এর উপর অনেকাংশে নির্ভর করে । মা ২০ সপ্তাহের মধ্যে হামে আক্রান্ত হলে গর্ভস্থ সন্তানের শারীরিক ও মানষিক বিকলাঙ্গতা বেশি হয় । উপরোক্ত সংক্রমনজনিত কারনে শিশু মস্তিস্ক ..চোখ .কান ও হার্টের সমস্যা নিয়া ভুমিস্টো হয় ।
পরিবেশগত কারনে যে সমস্ত বিকলাঙ্গতা হয় তা সুস্পস্টভাবে গবেষনায় প্রতীয়মান হয়নি ; তবে মনে করা হয় .ঘন বসতি . ভেজাল . খাবার .পানিতে মার্কারি বা নাইট্রেট কীটনাশক অথবা অন্যান্য বিসাক্তো পদার্থ শিশুর গঠনগত ও মানষিক ত্রুটি করে ।
গর্ভাবস্থায় কিছু ড্রাগ যেমনঃ মৃগী. .প্রসার .ডিপ্রেশন হাইপারথাইরোযেড নিরাময়ের কিছু কিছু ড্রাগ ..টেট্রাসাইক্লিন .ওয়ারফেরিন ইত্যাদি মা চিকিৎসা হিসেবে পেলে শিশু বিকলাঙ্গ হয় ।
জন্মগত ত্রুটি নির্নয় এর সময়গুলো :
১১ -১৩ সপ্তাহ
২০-২৪(মতান্তরে ২৬) সপ্তাহ ।
ত্রুটি সনাক্তের উপায় সমূহ :
* USG
* NT বিশেষ ধরনের usg – বাচ্চার ঘাড়ের ত্বকের নিচের পানির ঘনত্ব মাপা
*বাচ্চার থলের পানি পরীক্ষা
* গর্ভফুলের অতি সামান্য অংশ নিয়া পরীক্ষা * মায়ের রক্ত পরীক্ষা ।
প্রতিরোধের উপায় :
বিবাহের আগে পাত্র – পাত্রীর থ্যালাসেমিয়ার বাহক নির্নয় এবং পাত্র হেমোফিলিক কি না তা ণিস্চিত হওয়া ।
গর্ভধারণের ১ মাস আগে হাম প্রতিষেধক টিকা নেওয়া ।
বিশুদ্ধ খাবার খাওয়া
পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকা
ডাক্তারের পরামর্শে গর্ভবতীর মেডিসিন সেবন ।
পরিবারে বিকলাঙ্গ শিশু থাকলে দম্পতির জিন (chromosom ) এ্যানালাইসিস করা ।
গর্ভাবস্থায় শারীরিক বিকলাঙ্গ শিশু বুঝা গেলে কি করা দরকার ?
ত্রুটির ধরন ও মাত্রা বিবেচনা করবেন শিশু সার্জন এবং শল্য চিকিৎসায় বাচ্চার সুস্থতার উপর নির্ভর করে – দলগতভাবে সিধান্ত নিবেন শিশু সার্জন এবং গাইনী বিশেষজ্ঞ ও পার্টিকে কাউনসিলিং করবেন উভয়ে ।
পরবর্তী করনীয় পার্টির মতামত অনুসারে – শল্য চিকিৎসা বা গর্ভপাত ।
শল্য চিকিৎসায় ৬৫% শারীরিক বিকলাঙ্গতা নিরাময় হয় ।
মানসিক প্রতিবন্ধীর চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং মেধা -বিকাশ কতটুকু হবে নিশ্চিত করে বলা কঠিন ।
একবিংশ শতাব্দীতেও আমরা শিশুর জন্মগত ত্রুটি সম্বন্ধে সচেতন নই অথচ ১০০ টি শিশুর মধ্যে একজন শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে ।
ডাঃ নুরজাহান বেগম
সহযোগী অধ্যাপক (বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন)
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়